TECH GURU, TECH-SCIENCE NEWS

"I celebrate myself, and sing myself,
and what I assume you shall assume,
for every atom belonging to me as good belongs to you."

Friday, September 28, 2012

ছাত্রীর হাত ধরে শিক্ষকের পলায়ন


ব্রিটেনের স্কুলছাত্রী মেগান স্ট্যামার্স তার গণিতের শিক্ষককে বিয়ে করে ফ্রান্সে পাড়ি দিয়েছে। ১৫ বছর বয়সী মেগান আইনের চোখে বিয়ের জন্য এখনো অপ্রাপ্তবয়স্ক। তাই ঘটনায় টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। মেগানের বাবা-মা আজ সোমবার বিকেলে তাঁদের মেয়েকে ঘরে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে পুলিশ বলছে, এ জুটির কোন খোঁজ নেই তাদের কাছে।
বিকেলের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নাচোখে মেগানের মা বলেন, ‘সোনামণি, তুমি কী করেছ, কেন করেছ—এসব আমি জানতে চাই না। আমি শুধু চাই, তুমি বাড়িতে ফিরে এসো। তুমি জানো, তোমার রাজকন্যা তার মত্সকন্যাকে ফিরে পেতে চায়।’
সাসেক্সের পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলশিক্ষক জেরেমি ফরেস্ট (৩০) তাঁর ছাত্রীকে নিয়ে ফেরিতে করে ফ্রান্সে পালিয়েছেন। এর পরের কোনো খবর তাদের কাছে নেই। তাদের উদ্দেশে পুলিশের প্রধান পরিদর্শক জেসন টিঙ্গলে বলেন, ‘আমরা জানি, তুমি (মেগান) স্বেচ্ছায় জেরেমির সঙ্গে চলে গেছ, কিন্তু আমরা নিশ্চিত হতে চাই যে তুমি ভালো আছ। তুমি কোনো সমস্যা বোধ না করলেও তোমার পরিবার ও বন্ধুরা ভীষণ চিন্তিত। তোমাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের সহায়তা আমরা করব।’
মেগান ও ফরেস্ট গত বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের ডোভার থেকে ফেরিতে করে ফ্রান্সের ক্যালাইসে গেছে। গতকাল রোববার ফিরতি টিকিটে তাদের ফেরার কথা, তবে তারা ফেরেনি।
গত শুক্রবার মেগান স্কুলে অনুপস্থিত থাকার পর তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়।
গণিতশিক্ষক ফরেস্ট তাঁর ব্লগে লিখেছেন, তাঁদের নিষিদ্ধ প্রেমটি যেন ‘হেরোইনের নেশা ধরিয়ে দিয়েছিল’। তিনি চার মাস ধরে টুইটারে তাঁর শিক্ষার্থীকে ‘ফলো’ করেছেন। এ সময়ে তিনি তাকে হাজার হাজার প্রেমময় বার্তা পাঠিয়েছেন।
ফরেস্ট আরও লিখেছেন, প্রেমটি ছিল তাঁর ‘নৈতিক দ্বন্দ্ব’। তিনি বলেন, ‘কোনটি ঠিক, কোনটি বেঠিক, কোনটি গ্রহণযোগ্য বা কোনটি একেবারে মানা যায় না, তা কীভাবে নির্ধারিত হয় বা কীভাবে নির্ধারিত হওয়া উচিত?’
স্কুলের ভেতরে প্রেম বিষয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমি কয়েকটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। হয়তো আমরা অনেক ভুল করি। কিন্তু দিন শেষে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এটা ভেবে ভালো লাগে যে, আমি একজন ভালো মানুষ। যদি সত্যিই কেউ ভালো হয়, তবে নিজের বিচারের ওপর তাদের আস্থা রাখা উচিত।’
ফরেস্ট ও মেগানকে ধরতে আজ সোমবার ফরাসি পুলিশ সব প্রধান সড়কে পাহারা বসিয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, তারা একটি কালো ফোর্ড ফিয়েস্তা গাড়িতে অবস্থান করছে।
ফরেস্ট তাঁর ব্লগে লিখেছেন, ‘আমি সাগরের পানিতে এক টুকরো পাথরের মতো ডুবে যাচ্ছি। তোমার কায়ার জন্য আমি জ্বলেপুড়ে যাচ্ছি।’ আরেকটিতে তিনি লিখেছেন, ‘কিছু কিছু জিনিস ছাড়া আমি বাঁচতে পারি। কিন্তু, আমি তোমাকে জানাতে চাই যে, তোমাকে আমার এক্ষুনি চাই। রাত ফোরানোর আগেই ...’
ফরেস্টের ব্লগ ঘেঁটে দেখা গেছে, তিনি পালিয়ে যাওয়ার জন্য মেগানকে দুবার পরোক্ষভাবে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। গত ৩০ মে তিনি লিখেছেন, ‘মেয়ে, যদি আমাদের সামনে কেবল অনন্ত পথই খোলা থাকে, তবে চলো, সে পথকেই পাথেয় করে নিই।’
ঘটনার পর মেগানের স্কুল বিশপ বেল সি অব ই-এর শিক্ষকেরা এবং পরিচালনা কমিটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা বলছেন, ঘটনাটি ‘অনভিপ্রেত।’ প্রধান শিক্ষক টেরি বোটরাইট বলেন, ‘যা ঘটেছে, তার জন্য স্কুলের সবাই উদ্বিগ্ন ও দুঃখিত।’
মেগানের বাবা মার্টিন স্টেমার্স গত রাতে বলেন, ‘মনে হচ্ছে, এটা একটা দোজখ। ওরা কোথায়, কিছুই জানি না।’ মার্টিন মেগানের স্কুলেরই অন্য এক শাখায় শিক্ষকতা করেন।
ফরেস্ট ও তাঁর স্ত্রী এমেলি (৩১) ২০০৮ সালের কোনো এক সময় বিয়ে করেছিলেন ভালোবেসে। এরপর তাঁরা পূর্ব সাসেক্সের রিংমারে বাসা নিয়েছিলেন। নাম গোপন রাখার শর্তে তাঁদের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ফরেস্ট ও এমেলি প্রতি রাতেই ঝগড়া করতেন। একজন বলেন, ‘ওরা তিন বছর এখানে ছিল। তারা এত ঝগড়া-বিবাদ করত যে এলাকাটিকে মনে হতো একটা নরক। একসময় কোলাহল এত চরমে উঠেছিল যে আমি পুলিশে খবর দিয়েছিলাম। এতে অবশ্য কোনো কাজ হয়নি, ঝগড়াঝাটি চলছিলই।’
বাবা জিম ফরেস্ট ছেলের আচরণে ভীষণ ক্ষুব্ধ। তিনি চান ছেলে ফিরে আসুক এবং মেগানকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিক। ৫৯ বছর বয়সী এই তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে। পরিবারের সবার প্রশ্ন, এটা কী হলো? কেউ এটা বিশ্বাস করতে পারছে না।’
জিম বলেন, ‘শিক্ষকতার প্রতি জেরেমির বেশ ঝোঁক ছিল। আমি ওর স্কুলের ফুটবল দলের সঙ্গে কাজ করেছি। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, বাচ্চারা ওকে পছন্দ করত, সম্মান করত। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সে খুবই জনপ্রিয় ছিল।’
ছাত্রীর হাত ধরে শিক্ষকের পলায়ন - প্রথম আলো

No comments:

Post a Comment