TECH GURU, TECH-SCIENCE NEWS

"I celebrate myself, and sing myself,
and what I assume you shall assume,
for every atom belonging to me as good belongs to you."

Thursday, September 20, 2012

নারীর শরীর নিয়ে লড়াই




বিশ্বজুড়ে চলছে সংঘাত আর সংঘর্ষ। এর মধ্যেই যেসব বিষয় নিয়ে তর্ক আর উদ্বেগ ঘনীভূত হয়ে উঠছে, সেগুলোর অন্যতম হলো নারীর শরীর ও যৌনতা। চারদিকের ঘটনাবলিতে মনে হচ্ছে, এ নিয়ে যেন যুদ্ধ বেধে গেছে। হইচই বেধে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষকের সন্তানকে স্তন্যদান নিয়ে, কেট মিডলটনের নগ্নদৃশ্য ছাপানো নিয়ে, এমনকি ‘টাইম’ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে একজন মা তাঁর বাচ্চাকে দুধ পান করাচ্ছেন—এমন বিষয় নিয়েও।

শুধু যে নারীর স্তন নিয়ে এত মাতামাতি, তা কিন্তু নয়। রাশিয়ার পাঙ্ক গানের দল পুশি রায়ট নিয়েও চলছে বিতর্ক। মঞ্চে গান করার সময় ‘অসংযতভাবে’ যৌনস্থান দেখানোর দায়ে জেলে পোরা হয়েছে তাদের। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের আইনপ্রণেতা লিসা ব্রাউন পার্লামেন্টে বক্তব্য দিতে গিয়ে একপর্যায়ে তাঁর যৌনস্থানের নাম উচ্চারণ করায় তাঁকে আর বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়নি। তাহরির স্কয়ারে যে নারীরা গণতন্ত্র বা স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন, তাঁদেরও যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হয়। প্রশ্ন উঠেছে, চারদিকে হচ্ছেটা কী? এর উত্তর হলো, বিশ্বজুড়ে লড়াইয়ের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে দাঁড়িয়েছে নারীর শরীর।
পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে ইউরোপ এবং এর প্রচারমাধ্যমের মতাদর্শের অধীন যারা, তারা অবস্থান করছে একটি অতিযৌনতাসর্বস্ব সংস্কৃতির মধ্যে। এসব সমাজে পর্নোগ্রাফি খুব সাধারণ বিষয়। অথচ নারীর স্তন বা শরীর নিয়ে আলোচনা নিষিদ্ধ!
আসল ঘটনা হলো, বর্তমান সময়ের মতো আগে কখনোই নারীর শরীরকে এমনভাবে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়নি। নারীর যৌনতাকে ‘করপোরেটাইজড’ করে উপস্থাপন করার ঘটনাও আগে কখনো ঘটেনি।
নারীরা যখন তাঁদের শরীরকে নিজের বলে দাবি করেন, তখনো সেটার নিন্দা জানানো হয়। কিন্তু আইন করে নারীর জন্ম দেওয়ার ক্ষমতাকে কেড়ে নেওয়া বা বিভিন্ন ঘটনায় নারীর শরীরের ওপর পরীক্ষা চালানো কখনোই নিন্দার বিষয় হয় না।
পর্নোগ্রাফির প্রচার সামাজিক নিয়ন্ত্রণকে বাধাগ্রস্ত করে না। একে একটি নেশার মতো বিষয় বলে মেনে নেওয়া হচ্ছে। অথচ এর মধ্য দিয়ে নারীর শরীরকে একটি বিক্রিযোগ্য বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এভাবে লোকজনকে তাক লাগানো হচ্ছে, নারীদের ক্রমে অসুস্থ করে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু নারীকে স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে না।
যৌনতা নিয়ে এই সংগ্রামের প্রধান দিকগুলো হলো: কে সন্তান জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে? কে নির্ধারণ করবে স্তন কতটুকু খোলা থাকবে? কে নিজের যৌনস্থানের নাম উচ্চারণ করতে পারবে? কে বলে দেবে কারা যৌনকর্মী? এবং কে নিজের যৌন বা শৈল্পিক পরিচয়কে তুলে ধরার অধিকার পাবে?
যতক্ষণ এ বিষয়গুলোর সমাধান না হয়, ততক্ষণ লড়াই চলবে। লিঙ্গবিশেষজ্ঞ এমা রিস নারীর যৌনতা নিয়ে তাঁদের লড়াই সম্পর্কে বলেছেন, ‘যতক্ষণ আমরা আমাদের শরীর ও যৌনতা নিয়ে কথা বলার মতো ভাষা না পাব এবং খোলামেলা কথা বলতে না পারব, ততক্ষণ আমরা আপত্তিকর দৃষ্টিভঙ্গি ও মূঢ়তার দুষ্টচক্রে পাক খেতে থাকব।’ 

No comments:

Post a Comment