TECH GURU, TECH-SCIENCE NEWS

"I celebrate myself, and sing myself,
and what I assume you shall assume,
for every atom belonging to me as good belongs to you."

Wednesday, September 12, 2012

যে ফোনকল আসার কথা, আসে না!

ভুতড়ে কল..........................!!


আপনার পকেটে রাখা মুঠোফোনটি স্পষ্ট বেজে উঠতে শুনেছেন অথচ পরীক্ষা করে দেখলেন, কোন ফোন কলই আসেনি! এমন কি প্রায়শই ঘটছে আপনার সঙ্গে? অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনাকে বলা হয় ‘ফ্যান্টম ফোন রিংগিং সিনড্রোম’।
বর্তমানে বিশ্বে হাজার হাজার মানুষ এ ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেক সময় মনে হয়, পকেটে রাখা মুঠোফোন থেকে রিং টোন বাজছে বা কোনো বার্তা এসেছে। কিন্তু পরীক্ষা করে এরকম বিষয়ের সত্যতা মেলে না। 
গবেষকরা ধারণা করতেন, এটা হয়ত মনের ভুল বা মস্তিষ্ক ভুল শুনেছে, কিন্তু সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তত্ত্ব বিশেষজ্ঞ অ্যালেক্স ব্লাজোনাস্কি সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে জানিয়েছেন, এটা মনের ভুল বা মস্তিষ্কের শোনার ভুল নয়। এর সঙ্গে অন্য কোনো বৈদ্যুতিক তরঙ্গের যোগসূত্র রয়েছে যা মানুষের স্নায়ুতে সাড়া জাগায় এবং রিং টোন শোনার মত অনুভূতির সৃষ্টি করে।
অবশ্য অ্যালেক্স ব্লাজোনাস্কির সঙ্গে একমত নন ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির মনস্তত্ত্ববিদ ল্যারি রোজেন। তাঁর মতে, মানুষের মনে কল আসার বিষয়টি গেঁথে থাকায় তাদের স্নায়ু যেকোনো শব্দের মধ্যেই মোবাইল ফোন বাজার শব্দ শুনতে পারে।
এদিকে ম্যাসাচুসেটসের বেস্টেট মেডিকেল সেন্টারের গবেষক মাইকেল রোথবার্গ জানিয়েছেন, তিনি এ ধরনের ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে একটি জরিপ চালিয়েছেন। তাঁর জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ৬৮ শতাংশ রায় দিয়েছেন তাঁরা সপ্তাহে একদিন হলেও ফ্যান্টম ফোন ভাইব্রেশনের শিকার বা মোবাইল স্পন্দন ভেবে ভুল করেন। জরিপে অংশ নেওয়া ১৩ শতাংশের রায়, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন এ ঘটনা ঘটে।
গবেষক মাইকেল রোথবার্গ জানিয়েছেন, ফ্যান্টম ফোন রিংগিং সিনড্রোম ঘটার কারণ মস্তিষ্কে ভুল তরঙ্গের কম্পাঙ্ক টের পাওয়া।
তাঁর মতে, মস্তিষ্কের অসংখ্য স্নায়ু বার্তা থেকে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজতে মস্তিষ্ক তা ফিল্টার করে। এ প্রক্রিয়াকে হাইপোথিসিস গাইডেড সার্চ বলা হয়।
ফ্যান্টম ফোন রিংগিং হচ্ছে একটা অনুভূতি বা ভুল ধারণা যখন মানুষ তার নিজের মুঠোফোনে কোনো কিছু ঘটা না স্বত্বেও রিং টোন বাজতে শোনে বা স্পন্দিত হওয়ার অনুভূতি পায়। ফ্যান্টম রিংগিংকে অনেক সময় রিংজাইটি, হাইপোভাইব্রোকন্ড্রিয়া, ফক্সসেলারামও বলা হয়।
সাধারণত গোসল করার সময়, টেলিভিশন দেখার সময় বা গোলযোগপূর্ণ কোনো পরিবেশের ফ্যান্টম ফোন রিংগিং সিনড্রোম ঘটনা ঘটতে পারে।
গবেষকদের মতে, মানুষ ১ হাজার থেকে ৬ হাজার হার্টজ কম্পাঙ্কে বেশি সংবেদনশীল থাকে। অধিকাংশ মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে কম্পাঙ্কের মাত্রা এ সীমার মধ্যেই থাকে। কিন্তু এ কম্পাঙ্কের উত্পত্তিস্থল বের করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। তাই যেকোনো দূরত্ব থেকে এ শব্দ মনে ধাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। 
গবেষকরা জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনায় আতংকিত হওয়ার কিছু নেই, কারণ এতে কোনো ক্ষতি হয় না। তবে যাঁদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা বিরক্তিতে পরিণত হয়েছে তাঁরা সহজেই ‘ফ্যান্টম ফোন রিংগিং সিনড্রোম’ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এক্ষেত্রে গবেষকদের পরামর্শ হচ্ছে- মুঠোফোনে ভাইব্রেশন মোড বন্ধ করে দিতে বা রিংটোন বদলে দিতে পারেন। তবে তাতেও কাজ না হলে মুঠোফোনের অবস্থান বদল করে বা মুঠোফোনটি বদলে ফেলেও এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।



যে ফোনকল আসার কথা, আসে না! - প্রথম আলো

No comments:

Post a Comment