TECH GURU, TECH-SCIENCE NEWS

"I celebrate myself, and sing myself,
and what I assume you shall assume,
for every atom belonging to me as good belongs to you."

Friday, October 5, 2012

‘টাকা তো সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বাড়িতে যাচ্ছিল,এর আগেও গেছে’-আজম খান



  • জিএম ইউসুফ আলী মৃধা
    জিএম ইউসুফ আলী মৃধা
  • কমান্ড্যান্ট এনামুল হক
    কমান্ড্যান্ট এনামুল হক
  • এপিএস ওমর ফারুক
    এপিএস ওমর ফারুক
1 2 3 4
‘টাকা তো সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বাড়িতে যাচ্ছিল। ওদিকে যাওয়ার পথেই আমি ঘটনা ঘটিয়ে ফেলি। এর আগেও কয়েকবার টাকা গেছে।’
রেলের বহুল আলোচিত অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাবেক রেলমন্ত্রী ও বর্তমানে দপ্তরবিহীনমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুকের গাড়ির চালক আজম খানের বক্তব্য এটি। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি এসব কথা বলেন। 
গত ৯ এপ্রিল রাতে বিপুল পরিমাণ টাকাসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ঝিগাতলা গেট দিয়ে একটি গাড়ি ভেতরে ঢুকে পড়ে। ওই গাড়িটি ওমর ফারুকের আর সেটি চালাচ্ছিলেন আজম খান। গাড়ির যাত্রী ছিলেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইউসুফ আলী মৃধা, তাঁর নিরাপত্তা কর্মকর্তা রেলওয়ের কমান্ড্যান্ট এনামুল হক ও রেলমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুক তালুকদার। তাঁরা কেউই এখন স্বপদে বহাল নেই।
আজম খান দাবি করেন, রেলের নিয়োগের ৭৪ লাখ টাকা মন্ত্রীর বাড়িতেই নেওয়া হচ্ছিল। টাকা বস্তায় ভরে চালক তা নিজেই গাড়িতে তোলেন। ওমর ফারুক রেলের নিয়োগ বাণিজ্য সিন্ডিকেটের মূল হোতা বলেও তিনি দাবি করেন।
সঙ্গে আর কেউ ছিলেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আজম খান বলেন, ‘না না, আমার সঙ্গে অন্য কারও যোগসাজশ ছিল না। এমন না যে কাউকে চাকরি দিব বলে কারও কাছ থেকে টাকা এনেছি। এমন কিছু ছিল না। তবে এমন অনেক কিছুই রটেছে।’ 
আজমের ভাষ্য, বিপুল পরিমাণ টাকাসহ গাড়ি বিজিবিতে ঢুকিয়ে দেওয়ার সময় ওমর ফারুক তাঁর কাছে জানতে চান, গাড়ি নিয়ে তিনি কোথায় যাচ্ছেন? আজম দাবি করেন, ‘তখন আমি বললাম স্যার, এগুলো ঘুষের টাকা, দুর্নীতির টাকা, রেলের দুর্নীতির টাকা, এই টাকাসহ আমি আপনাদের ধরিয়ে দেব। এ জন্য আমি গাড়িটা ভেতরে ঢুকিয়েছি।’ 
আজম আরও দাবি করেন, ঘটনার রাতে তিনি বিজিবির গেট খোলা পেয়েছেন এবং গাড়িটি থামানোর জন্য কোনো সংকেত দেওয়া হয়নি। তাঁর ভাষায়, ‘তারা আমাকে সিগন্যাল দেয়নি আর আমিও দাঁড়াইনি।’ এর পেছনে তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘গাড়িটা দিনে কয়েকবার এদিক দিয়ে আসা-যাওয়া করে। তারা হয়তো চিনছে, এ জন্য গুরুত্ব দেয়নি।’ 
বিজিবির ভেতরে গাড়ি ঢুকিয়ে দেওয়ার পর ওমর ফারুক প্রথমে ভয় দেখান এবং পরে অর্থের লোভ দেখান বলে আজম খান দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ফারুক সাহেব তখন বললেন, “তুমি যে গাড়িটা ঢুকিয়েছ এটা ঠিক করনি।” পরে ওমর ফারুক তাঁকে বলেন, “এখান থেকে পাঁচ লাখ টাকা নাও। তুমি জিএম, নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে নামিয়ে দাও। আর এখানের অর্ধেক তোমার, বাকি অর্ধেক আমার”।’ আজমের দাবি, তিনি রাজি না হলে ফারুক তাঁকে সব টাকা দিয়ে দেওয়ার লোভ দেখান। 
টাকাসহ গাড়ি ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়ার পর সকালে সেই টাকা গণনা করা হয়েছিল বলে চালক আজম খান দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে টাকা গোনা হয়। ৭৪ লাখ টাকা ছিল। বাইরের চালক এনে গাড়ি নিয়ে তারা চলে যায়।’
রেলের নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে মেজর মশিউর রহমান নামের একজন জড়িত ছিলেন বলে আজম খান দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, তিন কোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে তিনি জড়িত।’ ওমর ফারুকের মাধ্যমে তিনি কয়েক শ লোককে রেলে ঢোকাতে চেয়েছিলেন বলে আজম দাবি করেন।
আজম খানের দাবি, মন্ত্রীকে ১০ কোটি টাকা দিয়ে ৬০০ লোককে রেলে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি গাড়িতে আলোচনা শুনেছেন। তাঁর দাবি, ‘দোষটা করেছেন মন্ত্রী। এখন সরকারের ওপর সেটা চাপাতে চান।’ আজম এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে তিনি এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টদের তদন্ত কাজে সহায়তা করতে চান। কোনো দুর্নীতিবাজ যেন ছাড় না পায়—এমন দাবি জানিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের নিরাপত্তা চান। পালিয়ে বেড়ানো জীবনের অবসান ঘটিয়ে স্বজনদের কাছে ফিরতে চান।



টাকা সুরঞ্জিতের বাড়িতে যাচ্ছিল - প্রথম আলো

No comments:

Post a Comment