TECH GURU, TECH-SCIENCE NEWS

"I celebrate myself, and sing myself,
and what I assume you shall assume,
for every atom belonging to me as good belongs to you."

Monday, September 30, 2013

মোবাইল ফোন যেসব ক্ষতি করছে!

নতুন মুঠোফোন কিনতে যাচ্ছেন? মুঠোফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করলে কী ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে সে বিষয়গুলো আপনার অবশ্যই জেনে নেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত সময় ধরে মুঠোফোন ব্যবহার করার ফলে ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যের ওপর নানা প্রভাব পড়ে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতি নিয়ে গবেষণাও হচ্ছে। একাধিক গবেষণার ফলের বরাতে হাফিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুঠোফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যায় পড়ছেন ব্যবহারকারীরা। হারানোর ভয় মুঠোফোন সব সময় ঠিক জায়গায় আছে কিনা তা নিয়ে মন সব সময় সতর্ক থাকে। মোবাইল হারানো ভয় থেকে মনের মধ্যে জন্ম নেয় এক সমস্যা। গবেষকেরা মুঠোফোন ও সঙ্গে যোগাযোগ হারানোর এই ভয়জনিত অসুখের নাম দিয়েছেন ‘নোমোফোবিয়া’; যার পুরো নাম ‘নো মোবাইল-ফোন ফোবিয়া’। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ৫৩ শতাংশ এবং ২৯ শতাংশ ভারতীয় তরুণরা এ রোগের শিকার। ৫ বছর আগেও যে রোগের অস্তিত্ব কল্পিত ছিল না, আধুনিকতার সে রোগ নিয়ে দেশে-বিদেশে চিন্তিত মনোবিজ্ঞানী-মহল। অতিরিক্ত মুঠোফোন নির্ভরতা কমিয়ে ফেলতে পরামর্শ দেন গবেষকেরা। ঘুমের মধ্যে বার্তা পাঠানো মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অতিরিক্ত সময় বার্তা পাঠানো, চ্যাটিং করার ফলে ঘুমের মধ্যেও এর প্রভাব পড়তে পারে। হতে পারে ‘স্লিপ টেক্সটিং’ সমস্যা। এ সমস্যা হলে রাতে ঘুমের মধ্যে কাকে কী বার্তা পাঠানো হয় তা আর পরে মনে থাকে না। বার্তা পাঠানোর বিষয়টি মাথায় থাকে বলে ঘুমের মধ্যেও হাতের কাছে থাকা মুঠোফোন থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত নম্বরে বার্তা চলে যায়। মনোবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দুশ্চিন্তা, কাজের চাপ আর মুঠোফোন নিয়ে অনেকের দিন কাটে। এমন অবস্থায় স্লিপ টেক্সটিং ঘটতে পারে। রাতে বিছানার পাশে মুঠোফোন না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা। কমতে পারে চোখের জ্যোতি যুক্তরাজ্যের চক্ষু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, মুঠোফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে দৃষ্টি বৈকল্য সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে মায়োপিয়া বা ক্ষীণ দৃষ্টির সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সাধারণত চোখ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার দূরত্ব রেখে তা ব্যবহার করেন। তবে, অনেকের ক্ষেত্রে এ দূরত্ব মাত্র ১৮ সেন্টিমিটার। সংবাদপত্র, বই বা কোনো কিছু পড়ার ক্ষেত্রে সাধারণত চোখ থেকে গড়ে ৪০ সেন্টিমিটার দূরত্ব থাকে। চোখের খুব কাছে রেখে অতিরিক্ত সময় ধরে স্মার্টফোন ব্যবহার করলে জিনগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্ষীণদৃষ্টি সৃষ্টির জন্য যা ভূমিকা রাখতে সক্ষম। গবেষকেরা একে ‘এপিজেনেটিকস’ সংক্রান্ত বিষয় বলেন। গবেষকেরা দীর্ঘক্ষণ ধরে স্মার্টফোনে চোখ না রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন। দৈনিক কিছু সময় মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন তাঁরা। স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে বয়স বিবেচনার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকেরা। কানে কম শোনা মুঠোফোন ব্যবহারের ফলে কানের সমস্যা তৈরির বিষয়টি অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে। হেডফোন ব্যবহার করে উচ্চশব্দে গান শুনলে অন্তকর্ণের কোষগুলোর ওপর প্রভাব পড়ে এবং মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক আচরণ করে। একসময় বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। শরীরের অস্থি-সন্ধিগুলোর ক্ষতি অতিরিক্ত সময় ধরে মেসেজ বা বার্তা টাইপ করা হলে আঙুলের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হতে পারে এবং অবস্থা বেশি খারাপ হলে আর্থরাইটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়াও অনেকে অনেকেই কাজের সময় মুঠোফোন ব্যবহার করতে গিয়ে কাঁধ ও কানের মাঝে ফোন রেখে কথা বলেন। অনেকেই অতিরিক্ত ঝুঁকে বসে দীর্ঘ সময় ধরে বার্তা পাঠাতে থাকেন। বসার ভঙ্গির কারণেও শরীরে নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে। চিকিত্সকের পরামর্শ হচ্ছে অতিরিক্ত সময় ধরে মুঠোফোনে বার্তা লিখবেন না, এতে করে শরীরের জয়েন্ট বা সন্ধির সমস্যা থেকে সুস্থ থাকতে পারবেন। কমে যেতে পারে শুক্রাণু গবেষকেরা জানান, মুঠোফোন থেকে হাই ফ্রিকোয়েন্সির ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন নির্গত হয়। এই ক্ষতিকর তরঙ্গের সঙ্গে মস্তিষ্কে ক্যানসারের যোগসূত্র থাকতে পারে। এ ছাড়া শরীরের অন্য কোষকলা এই ক্ষতিকর তরঙ্গের প্রভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে পুরুষের প্রজননতন্ত্রেরও। গবেষকেদের দাবি, মুঠোফোন থেকে নির্গত ক্ষতিকর তরঙ্গ শুক্রাণুর ওপর প্রভাব ফেলে এবং শুক্রাণুর ঘনত্ব কমিয়ে দিতে পারে। যখন তখন রিং টোন! এ সমস্যা মূলত উদ্বিগ্নতা বা বিষণ্নতা থেকে ঘটতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলে ব্যবহারকারী ফোনের রিং না বাজলে কিংবা ভাইব্রেশন না হলেও হঠাত্্ করেই তা শুনতে পান বা অনুভব করেন। অতিরিক্ত মুঠোফোন ব্যবহারের কারণে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের সমস্যা ভুগতে শুরু করলে তা টেরও পান না অনেক ব্যবহারকারী। ঘুম নেই! স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, ডেস্কটপের অতিরিক্ত ব্যবহার ও অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখার ফলে সবচে বেশি দেখা দেয় ঘুমের সমস্যা বা নিদ্রাহীনতা। যারা ঘুমাতে যাওয়ার আগে এ ধরনের প্রযুক্তি-পণ্য অতিমাত্রায় ব্যবহার করেন তাদের শরীরে মেলাটোনিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে; যার কারণ প্রযুক্তিপণ্য থেকে নির্গত উজ্জ্বল আলো। এক পর্যায়ে ঘুমের মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয় এবং স্লিপ ডিজঅর্ডারের ঝুঁকি তৈরি হয়। টয়লেট সিটের চেয়েও নোংরা মার্কিন গবেষকেরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, টয়লেট সিটের তুলনায় ১০ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে মুঠোফোনে। মুঠোফোন নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এটি জীবাণুর অভয়ারণ্য হয়ে ওঠে। গবেষকেরা বলেন, মুঠোফোনে ব্যাকটেরিয়াগুলো ব্যবহারকারীর জন্য খুব বেশি ক্ষতিকারক না হলেও এটি থেকে সংক্রমণ বা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। নিয়মিত মুঠোফোন পরিষ্কার করলে এ সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।

Thursday, September 26, 2013

সুখী ছিল আজ সুখী নেই..... একটি করুণ প্রেমের গল্প

‘আমাদের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। সবার কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ। আমাদের দেহগুলো দয়া করে কাটতে দেবেন না। পাশাপাশিই আমাদের কবর দেবেন। আর সবাই আমাদের ক্ষমা করে দেবেন। আমরা একজন আরেকজনকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। তাই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলাম। বেঁচে থাকতে তো কেউ আমাদের এই সম্পর্ক মেনে নেবে না। বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে তাদের মনেও কষ্ট দিতে পারব না। তাই এই পথ বেঁচে নিতে বাধ্য হলাম দুজন। ইতি: রমজান + সুখী।’ পাঠক, এটি একটি সুইসাইড নোট। দুই তরুণ-তরুণীর আত্মহননের আগে এই চিরকুট লিখে গেছেন। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়ার চৌধুরীহাটে ১৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর আগে অভিভাবকেরা তাঁদের সম্পর্ক মেনে না নিলেও পাশাপাশি হয়েছে শেষ আশ্রয়। বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে শুয়ে আছে এই জুটি। এখনো তাজা কবর। কবরে গুঁজে দেওয়া খেজুর গাছের ডাল দুটিও সতেজ। রমজান আলী (২০) ও সুখী আকতার (১৬)। চৌধুরীহাটের বারইপাড়া গ্রামে সামনাসামনি দুজনের বাড়ি। দূরত্ব বড়জোর ৫০ গজ। সম্পর্কে বেয়াই-বেয়াইনও (তালতো ভাই-তালতো বোন)। রমজান নোয়াপাড়া কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সুখী নোয়াপাড়া মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। পাশাপাশি থাকার সুবাদে কাছাকাছি আসে একে অপরের। একসময় দুটি তরুণ মন স্বপ্ন দেখে ঘর বাঁধার। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বও আরেকটি প্রেমের সম্পর্ক ঘিরে। তিন বছর আগে রমজানের বড় ভাই আজগর আর সুখীর বড় বোন লাকী ভালোবেসে বিয়ে করেছেন। এ সম্পর্ক এখনো মেনে নেয়নি দুই পরিবার। এই বিষয়টি বারবার ঘুরপাক খেতে থাকে দুজনের মাথায়। কী করবেন তাঁরা। পরিবার, না সম্পর্ক—এই টানাপোড়েনে মুষড়ে পড়েন রমজান ও সুখী। শেষ পর্যন্ত জীবনকে ছুটি দিয়ে দিলেন এই দুই তরুণ-তরুণী। মরণেও দুজন দুজনকে ছাড়া ভাবতে পারেননি কোনো কিছু। সেখানেও সহমরণ। সুখীদের বাড়ির পেছনের পুকুরপাড়ে একটি জামগাছের ডালে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন দুজন একসঙ্গে। একে অপরকে কোমরে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁদের মরদেহ। নিশ্চিত হওয়া গেছে, সুইসাইড নোটটি সুখীর হাতের লেখা। গত মঙ্গলবার চৌধুরীহাটে সুখীদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ঘরের দাওয়ায় বসে আছেন মা জোবেদা খাতুন। মুখে কথা নেই। শুধু এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন। মেয়ের জন্য এখনো বিলাপ করে চলেছেন বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস। বাড়ির ভেতরে সুখীর কক্ষে পড়ার টেবিলে থরে থরে সাজানো পাঠ্যবই রসায়ন, বাংলা...। খাতাও পড়ে আছে টেবিলের ওপর। শুধু সুখী নেই। তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট সুখী। ভাইদের বড় আদরের ছিল সে। বোনের মৃত্যুসংবাদ শুনে ওমানের মাসকাটে থাকা দুই ভাই ছুটে এসেছেন এক নজর শেষ দেখা দেখতে। ভাইদের জন্য মরদেহের গাড়িতে লাশ রেখে দেওয়া হয় দুদিন। তাঁরা আসার পর দাফন করা হয়। বাবা ইদ্রিস বলেন, ‘আমরা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি ও (সুখী) এ কাজ করবে। শান্তশিষ্ট, পড়ালেখায়ও ছিল ভালো। ছেলেটিও (রমজান) ছিল শান্ত। আমাদের মাথায় ছিল না তারা দুজন এমন করবে।’ মাসকাট থেকে আসা সুখীর ভাই মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছা ছিল তাঁকে ডাক্তারি পড়াব। এখন সব শেষ।’ রমজানের বাড়িতেও শোকের মাতম। ছয় ভাই একবোনের সবার ছোট রমজান। তিনি চলে গেলেন সবার আগে। বাবা সালেহ আহমেদ থাকেন সৌদি আরবে। ছেলের মৃত্যুসংবাদ শুনে তিনিও মুষড়ে পড়েছেন। এ ঘটনা মানতে পারছেন না সুখীর বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও। কথা বলার সময় শ্রেণী শিক্ষক ফণী ধর দাশের গলা ধরে আসছিল। বললেন, ‘সে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত প্রথম অথবা দ্বিতীয় হয়ে এসেছে। কিন্তু নবম শ্রেণীর শেষ দিকে এসে সে প্রায়ই বিষণ্ন থাকত। যার প্রভাব পড়ে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলে। রোল নম্বর হয় ১১। আমি নানাভাবে তার কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছি কি হয়েছে। কিন্তু কিছু বলেনি।’ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমরা প্রতিটি শ্রেণীতে কাউন্সেলিং করেছি। শিক্ষার্থীদের বলেছি, এ ধরনের ঘটনা হলে পারিবারে বলতে না পারলেও যেন শিক্ষককে জানায়। আর অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে।’ রমজানের বন্ধুরা জানান, তিনি প্রায় সময় তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে হতাশ থাকত। বলত, ‘দেখিস, একদিন সব ছেড়ে চলে যাব।’ এ যাওয়া যে শেষ যাওয়া হবে, তা বোঝেননি বন্ধুরাও। মোহিত কামাল, মনোরোগ চিকিত্সকআত্মহত্যা কোনো সমাধান নয় মোহিত কামাল, মনোরোগ চিকিৎসক তরুণ-তরুণীদের এ ঘটনা নিয়ে আমরা কথা বলেছিলাম মনোরোগ চিকিৎসক মোহিত কামালের সঙ্গে। তিনি তিনটি ভাগে ভাগ করে এ ঘটনাটি বিশ্লেষণ করেছেন। প্রথমত: তরুণ প্রজন্ম ও মানসিকভাবে বিষণ্ন নারী-পুরুষদের বলতে চাই, আত্মহত্যা কোনো সমস্যার সমাধান নয়। আত্মহত্যা মানে নিজেকে খুন করা। ধর্মীয় অনুশাসন ও সামাজিক বিধিনিষেধ না মেনে আইন লঙ্ঘন করা। রমজান ও সুখী সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ, তাঁরা সমস্যা দেখে নিজেদের খুন করেছেন। তাঁরা খুনি। দ্বিতীয়ত: অভিভাবকেরা তাঁদের অবেগটা বুঝতে পারেননি। এটি তাঁদের বড় ব্যর্থতা। রমজান ও সুখীর আবেগের মধ্যে কোনো শঠতা ছিল না। তাঁদের ভালোবাসার টানটা ছিল তীব্র। তরুণ বয়সের প্রথম প্রেম এ রকম হয়। সবকিছু ছাপিয়ে সম্পর্কটা তাঁদের কাছে অনেক বড় হয়ে দাঁড়ায়। একে অপরকে না পেলে জীবন শেষ হয়ে যাবে, এমন ধারণা হয়। কিন্তু অভিভাবকেরা তাঁদের আবেগ না বুঝে পুরোনো বিরোধ জিইয়ে রেখেছেন। যার ফলে চলে গেল দুটি প্রাণ। তৃতীয়ত: অভিভাবকদের বলতে চাই, তরুণ-তরুণীদের এ ধরনের সম্পর্ক দেখলে সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে। তাদের আবেগকে মূল্য দিয়ে সুযোগ দিতে হবে বিষয়টি শেয়ার করার। সময় নিয়ে তাদের বোঝাতে হবে। বাড়াতে হবে মমত্বের হাত। তাহলে বাস্তবতা বুঝে তারা নিজেরাই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। কিন্তু তা না করে আমাদের সমাজে প্রথমেই তাদের ওপর নেমে আসে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। তা কখনোই সমস্যার সমাধান নয়। বাধা পড়লেই তারা পালিয়ে যায়, আত্মহত্যা করে কিংবা জড়িয়ে যায় মাদকের জালে। সংকট উত্তরণে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে তাদের মনোরোগের চিকিৎসা দেওয়া উচিত।

ভালবাসি বন, ভালবাসি সবুজ প্রকৃতিকে ভালো না বাসার কৌশল

টাইম-এর চোখে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকৃতিকে ভালো না বাসার কৌশল রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সুন্দরবনের সবচেয়ে ভয়াল সুন্দর প্রাণী। বাংলাদেশকে যাঁরা জানেন, সবাই বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের এই নিরাপত্তাপ্রহরীকে চেনেন। যে সুন্দরবনকে এত দিন রয়েল বেঙ্গল টাইগার পাহারা দিয়ে আসছে, সেই মানুষখেকোদের এখন নিশ্চিহ্ন হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে যাচ্ছে। সুন্দরবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়ে পরিবেশবাদীরা। সংশয়ের কারণ, সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে রামপাল এলাকায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হতে যাচ্ছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার যৌথ উদ্যোগে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিতে এবং দ্রুত বর্ধনশীল বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। আর তাতে সহযোগিতা করছে ভারত। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হলে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে সরকার। কিন্তু এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে একটি বিরোধীপক্ষ। এ পক্ষের দাবি, সুন্দরবনের এত কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হলে তা পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এতে সুন্দরবনের সংলগ্ন পানির ডলফিন থেকে শুরু করে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বন্য প্রাণীর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বন্যাঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশকে সুন্দরবন সব সময় রক্ষা করেছে। সুন্দরবনের ক্ষতি হলে জলবায়ু ভয়ংকর ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে সুন্দরবন রক্ষা কমিটির সদস্য কল্লোল মোস্তফা জানিয়েছেন, ‘কারও পক্ষে এ ধরনের প্রকল্পে মত দিতে রাজি হওয়ার কথা নয়।’ রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতার সঙ্গে ১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে নির্মিত একটি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদাহরণ টেনে আনছেন সমালোচকেরা। তাঁদের যুক্তি হচ্ছে, টেক্সাসের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সময় কর্তৃপক্ষ পরিবেশের ক্ষতি হবে না বলেছিল। কিন্তু ২০১০ সালে এসে গবেষকেরা জানান, ওই বিদুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি বছর নির্গত ৩০ হাজার টন সালফার ডাই-অক্সাইড কৃষিক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি উঠছে। টেক্সাসের ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে তুলনা করলে রামপালের প্রস্তাবিত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি বছর ৫২ হাজার টন সালফার ডাই-অক্সাইড নির্গত হবে। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তর। এ তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে পরিবেশগত কোনো ক্ষতি হবে না বলে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও সমালোচকেরা বলছেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে এবং এ প্রকল্পটি নিয়ে মানুষের মনে নানা সন্দেহ রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এ প্রকল্পে লাভ হবে কার? বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ভারতের অতিমাত্রার আগ্রহ নিয়েও মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। ভারতের গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশে দুটি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে যেখানে আইনি বাধা ও প্রতিরোধের মুখে আটকে গেছে, সেখানে বাংলাদেশে সুন্দরবনের কাছে এ প্রকল্প নিয়ে ভারতের কাজ করতে যাওয়ার বিষয়টি সন্দেহ তৈরি করছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ মোশাহিদা সুলতানা ঋতু বলেন, ‘এটা চক্রান্ত। নিজের দেশে বন্ধ করে দিয়ে অন্য দেশের আইন ভাঙছে তারা।’ রামপালের প্রকল্প পরিচালক আজিজুর রহমান অবশ্য আইন ভাঙার বিষয়টি নাকচ করেছেন। আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, ‘তেল ও গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরিতে অনেক খরচ। তাই ভবিষ্যতের বিদ্যুৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ ছাড়া বিকল্প নেই। এখানে ভারত তাদের নিয়মনীতি অনুযায়ী চলবে আর আমরা আমাদের। একদল বিশেষজ্ঞ এ প্রকল্পটি পর্যবেক্ষণ করে সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই এ প্রকল্প চালু হচ্ছে। গবেষণায় কী পাওয়া গেছে এবং ভারতের সঙ্গে চুক্তিতে কী শর্ত রয়েছে, তা যে কেউ ইচ্ছা করলেই দেখে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশের নীতিমালা অনুযায়ী দূষণ ঠেকানোর সব ব্যবস্থা নেব।’ পরিবেশ বিপর্যয় রোধের সব ধরনের নিশ্চয়তা থাকলেও সংশয় থেকেই যাচ্ছে। গবেষকেরা বলছেন, গত এক দশকে মানুষসৃষ্ট নানা কারণে ৫০ হাজার হেক্টর সুন্দরবন নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়াও শিপইয়ার্ড নির্মাণসহ নানা কারণে সুন্দরবন ও দক্ষিণাঞ্চলের জনগণকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সুন্দরবন রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে লংমার্চ শুরু করেছে সুন্দরবন রক্ষা কমিটি। লংমার্চ সমর্থনকারী আবদুল্লাহ আবু দিয়ান নামের একজন জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। সারা দেশের মধ্যে সুন্দরবনটাই বাকি রয়ে গেছে যেটা সত্যিকারের বন বলে মনে হয়। এটাও যদি কোনো রকমে ধ্বংস হয়ে যায়, তবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আর পরিবেশের গুরুত্ব বুঝবে না। কারণ, আমরা যা কেবল স্পর্শ করতে পারি, অনুভব করতে পারি এবং যা ভালোবাসি তারই গুরুত্ব দিই।’

সে এক আজব কথা সমুদ্রের মাঝে কৃষ্ণগহ্বর!

ক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের ঘূর্ণি-স্রোতসম্প্রতি সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক দাবি করেছেন তাঁরা পৃথিবীতে ব্ল্যাকহোলের বৈশিষ্ট্যযুক্ত একটি রহস্যময় জায়গার সন্ধান পেয়েছেন। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে তাঁদের খুঁজে পাওয়া এ রহস্যময় স্থানটি মহাশূন্যের ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণ গহ্বরের মতোই। ব্ল্যাকহোল দেখা অসম্ভব, তবুও জ্যোতির্বিদরা বিশ্বাস করেন যে এ মহাবিশ্বে ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব রয়েছে। ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের অস্তিত্ব ও প্রকৃতি বিষয়ক একটি বহুল প্রচলিত ধারণা। কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের এমন একটি বস্তু যা এত ঘন সন্নিবিষ্ট বা অতি ক্ষুদ্র আয়তনে এর ভর এত বেশি যে মহাকর্ষীয় শক্তি কোন কিছুকেই তার ভিতর থেকে বের হতে দেয় না, এমনকি আলো ও তড়িত্-চুম্বকীয় বিকিরণও ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর থেকে বের হতে পারে না। ব্ল্যাকহোলে পতিত কোনো বস্তুর বিকিরণ পর্যবেক্ষণ করে এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেন গবেষকরা। গবেষকেরা হিসাব করে দেখেছেন, ব্ল্যাকহোলের ক্ষেত্রে আলোর যে অবস্থা হয়, দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের রহস্যময় এ অঞ্চলটিতে পানির ক্ষেত্রেও ঠিক একই অবস্থা হয়। গবেষকেরা জানিয়েছেন, মহাসাগরের মাঝে বিশাল এক ঘূর্ণি-স্রোত তার চারপাশের সব কিছুকে এমন বৃত্তাকারভাবে ঘোরাতে থাকে যে, কোনো কিছুই এ ঘূর্ণি-বৃত্ত থেকে বের হতে পারে না। গবেষকেরা বলছেন, এ ধরনের ঘূর্ণি-স্রোত উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে সমুদ্রের বরফ গলে যাওয়ার ঘটনা ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এ ধরনের ঘূর্ণি-স্রোতের প্রভাব নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন মার্কিন গবেষকেরা, যা ভবিষ্যতে সমুদ্রের অজানা রহস্যের সমাধানের পাশাপাশি পরিবেশ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজেও লাগবে।

Wednesday, September 25, 2013

গুগলে পরকীয়া ও রাজনীতির খেলা

গুগলের দর্শন নিখুঁত হলেও তাতে অসম্পূর্ণতাও রয়েছেগুগলের রঙিন লোগোটি দেখে হয়তো অনেকেই ভাবতে বসেন প্রতিষ্ঠানটির রঙিন আর সুশৃঙ্খল কর্মপরিবেশের কথা। হয়তো মনের পর্দায় ভেসে ওঠে গুগলের কর্মীদের ইচ্ছামতো কাজ করতে পারার চিত্র। বাইরে থেকে দেখলে গুগলকে একদল প্রযুক্তিপ্রেমী মানুষের প্রতিষ্ঠান মনে হতে পারে। অনেকে হয়তো ভেবে বসতে পারেন, গুগলের নেতৃত্ব এমন প্রযুক্তি আদর্শে লালিত যারা স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, প্রযুক্তি চশমা বা নানা প্রযুক্তিপণ্য নিয়েই ভাবছেন সারাক্ষণ। আসলে, গুগলের দর্শন নিখুঁত হলেও তাতে অসম্পূর্ণতাও রয়েছে। প্রযুক্তি ও ব্যবসাবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘বিজনেস ইনসাইডার’-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইরে থেকে গুগলকে যতটা রঙিন বলে মনে হয়, আসলে এর আড়ালের গল্পটা আরও বেশি রঙিন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গুগলের মাউনটেন ভিউ ক্যাম্পাসের চার দেয়ালের আড়ালে গুগল এক রাজনীতি আর যৌনতার আখড়া। গুগলে যৌনতা গুগলে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন এবং গুগলের মূল ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন এমন একজন কর্মীর বক্তব্য হচ্ছে, গুগলের আড়ালের গল্প যেন মার্কিন টিভি শো ‘গেম অব থর্নস’-এর মতো। যেখানে রয়েছে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে কর্তৃত্বের যুদ্ধ, উত্তরাধিকার নিয়ে সুচতুর পরিকল্পনা, যৌনতা আর রাজনীতি। গুগলের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রকাশ্য কোনো সংঘাত নেই সত্যি, তবে যৌনতা আর রাজনীতি? গুগল সূত্র জানায়, অবশ্যই রাজনীতির কূটচাল আর যৌনতার মতো বিষয়গুলো গুগলের সঙ্গে রয়েছে। গুগলের আড়ালের গল্প যাঁরা বলেছেন এবং লিখেছেন, তাঁরা সবাই বিষয়টিকে তুলে এনেছেন। গুগল যখন যাত্রা শুরু করেছিল সে সময়কার ঘটনা নিয়ে লেখক ডগলাস অ্যাডওয়ার্ডস তাঁর লেখা ‘আই অ্যাম ফিলিং লাকি: দ্য কনফেশন অব গুগল এমপ্লয়ি নাম্বার ৫৯’ নামের বইয়ে তুলে ধরেছেন গুগলের আড়ালের বেশ কয়েকটি ঘটনা। এ বইতে গুগলের সাবেক মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান হিদার করিনসের ভাষ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, গুগলের চারপাশের বাতাসে হরমোন উড়ছে এবং অনেকেই তাঁর ঘরের দরজা পর্যন্ত বন্ধ করতে ভুলে গেছেন। গুগলের প্রকৌশলীদের অনেককেই এমন অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থায় ধরা হয়েছে, যাতে তাঁদের চাকরি থাকার কথা নয়। কিন্তু গুগল কর্তৃপক্ষ কাউকে চাকরিচ্যুত করেনি। এর পর থেকে ধীর ধীরে গুগলের কর্মীদের মধ্যে রোমান্টিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এ সম্পর্কগুলোকে আবার ঠিক অস্বাভাবিক সম্পর্কের পর্যায়ে ফেলা যাবে না। স্বাভাবিক ও গতানুগতিক এ সম্পর্কের কারণে এর আগে কখনো কোনো কেলেঙ্কারি ছড়ায়নি। গুগলের কর্মীদের মধ্যে যদি সম্পর্ক গড়ে ওঠে তবে তাঁরা ডেটিংয়ে যান, পরে বিয়ে করে নেন বা সম্পর্ক ভেঙে ফেলেন। এ ধরনের সম্পর্কের বিষয়গুলো কবে ঘটল, কারও তেমন চোখে পড়ে না। তবে ব্যতিক্রম যে নেই, তা কিন্তু নয়। সম্প্রতি প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘অল থিংস ডিজিটাল’ একটি খবর প্রকাশ করে যেখানে গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিনের ব্যক্তিগত জীবনের একটি ঘটনা স্ক্যান্ডাল আকারে ছড়িয়ে পড়ে। গুগলের এক জুনিয়র সহকর্মীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় সের্গেই ব্রিনের সংসার ভেঙে যাওয়ার খবর প্রকাশ করে ‘অল থিংস ডিজিটাল’। সের্গেই ব্রিন যাঁর সঙ্গে প্রেম করেছেন, ওই কর্মী কিছুদিন আগে হুগো বাররা নামের গুগলের আরেক কর্মীর সঙ্গে প্রেম করছিলেন। এ ঘটনার পর হুগো বাররা গুগল ছেড়ে চীনের শাওমি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। ব্রিনের এ ঘটনার মতো গুগলে নিশ্চয়ই আরও ঘটনা রয়েছে। গুগলের কর্মকর্তাদের মধ্যে পরকীয়ার ঘটনা অনেক রয়েছে। সহকর্মী ও অধস্তনদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর বিষয়টি নতুন ঘটনা নয়। গুগলের এক যুগলের কথা শোনা যায় যাঁরা স্বামী-স্ত্রী হলেও গোপনে দুজনই আরও দুজনকে বিয়ে করেছেন এবং তাঁদের সন্তানও রয়েছে। এ ছাড়াও গুগলের চেয়ারম্যান এরিক স্মিডের স্ত্রীকে ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’ একবার তাঁর স্বামীর পরকীয়া প্রেমের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র জীবনযাপন করি।’ গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতার রোমান্টিক সম্পর্কগুগল এমন একটি জায়গা যেখানে সবকিছুর ক্ষেত্রেই প্রচ্ছন্ন অনুমতি পান এখানকার কর্মকর্তারা। গুগলে কাজের সময় সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে এক কর্মী বলেন, গুগল থেকে অনেক বিষয়ে ছাড় পাওয়া যায়। প্রযুক্তি ও ব্যবসায় দক্ষ কর্মীদের নিয়ে গড়া গুগলের মতো একটি কর্মপরিবেশে মানুষ পরস্পরের প্রতি আকর্ষিত হবে, এটাই স্বাভাবিক। যাঁরা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বেন, তাঁদের সঙ্গে যুদ্ধ করে আটকে রাখা যাবে না। ওই কর্মী দাবি করেন, শুধু গুগলে নয়, ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানের পেছনের গল্পও একই। গুগলে রাজনীতি এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার নাপা ভ্যালির কারনেরস ইন নামের হোটেলে দুদিনের এক অবকাশ বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন গুগলের বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা। এ সময় এখানে উপস্থিত ছিলেন গুগলের বিজ্ঞাপন বিভাগের কর্মকর্তা সুসান ওজকিসকি, অ্যান্ড্রয়েড বিভাগের প্রধান অ্যান্ডি রুবিন, ইউটিউবের সিইও সালার কামাঙ্গার, গুগল ক্রোমের প্রধান সুন্দর পিসাই, গুগল প্লাসের কর্মকর্তা ভিক গানডোটরা। এ সময় গুগলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছিলেন তাঁদের নির্দিষ্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও। এ বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা অবশ্য গোপন ছিল। এ বৈঠকে গুগলের কোনো লোগো ব্যবহার করা হয়নি। এ দুদিন একসঙ্গে থাকার ফলে গুগলের সব বিভাগের প্রধানদের মধ্যে পরস্পরকে জানার পরিবেশ তৈরি হয়। গুগলের সব বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে যোগ দেন গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ। ল্যারি পেজ এ সময় গুগলের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘গুগলের লক্ষ্য অনেক দূর, কিন্তু গুগল কখনো এর নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারবে না, যদি এই বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তাদের মধ্যে পরস্পরের সঙ্গে ঝগড়া-লড়াই বন্ধ না হয়।’ ল্যারি পেজ আরও বলেন, ‘এখন থেকে গুগল কোনো মারামারি বা পরস্পরের সঙ্গে সংঘাত সহ্য করবে না।’ পেজ এ সময় আরও বলেন, গুগল যখন শুরু হয়েছিল তখনকার দিনগুলোতে গুগলের নেতৃত্বের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সহ্য করেছি কিন্তু সে সময় গুগলের সমস্যাগুলো ছিল অল্প। সে সময় গুগলের বাজার দখল করতে যেকোনো কিছু করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। বর্তমানে বিভিন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে গুগল শীর্ষস্থানে চলে আসায় এর সমস্যাগুলো এখন বেশি। গুগল এখন যে অবস্থায় রয়েছে এর চেয়েও আরও ১০ গুণ বড় হতে হবে গুগলকে। নতুন বাজার তৈরি করতে হবে এবং সব সমস্যা সমাধান করতে হবে। গুগলের বিদ্যমান সমস্যা দূর করতে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার জন্য তাগাদা দেন গুগলের প্রধান নির্বাহী। শেষে ল্যারি পেজ বলেন, গুগলে রাজনীতি আর লড়াই চলতে থাকলে পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ল্যারি পেজের কথার মধ্যেই গুগলের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার গুগলে দীর্ঘদিন ধরে তো পরস্পরের সঙ্গে লড়াই করেই আসছি।’ আরেক কর্মকর্তা ওই সময় বলেন, ‘রাজা সহ্য করছে বলেই রাজপুত্ররা যুদ্ধ করছে।’ কথা অবশ্য ঠিক, গুগলের রাজা দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিষ্ঠানটিতে রাজনীতির খেলা সহ্য করছেন। বিতর্কের নাম গুগল গুগলে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে গেলে তা অবশ্যই চরম বিতর্ক করে তবেই নেওয়া হয়। নব্বইয়ের দশকে গুগলের শুরুর দিনগুলো থেকেই এ বিষয়টি চলে আসছে। গুগল নিয়ে লেখা বইতে ডগলাস অ্যাডওয়ার্ড লিখেছেন, ব্রিন ও পেজ দুজন কোনো সিদ্ধান্তের ঐকমত্যে পৌঁছাতে গালিগালাজ, তর্কবিতর্ক কোনো কিছুই বাদ রাখতেন না। নতুন কর্মীদের সামনেও দুজন প্রকাশ্যে তর্কেবিতর্কে জড়িয়ে পড়তেন। নতুন কর্মীদের তর্কবিতর্ক শুনতেন। শেষে বিতর্কে যে জয়ী হয়, তার কথা শোনা হতো। এ সময় গুগলে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বা নিয়ন্ত্রণ ছিল না। গুগলে তর্কবিতর্ক করে কাজ বাগিয়ে নেওয়া এবং হেরে যাওয়া কর্মীদের মধ্যে বিভেদ সব সময় ছিল। তর্কবাগীশরা সব সময় গুগলের প্রধানের কাছ থেকে ভালো পদ পেয়েছেন। এখনো গুগলে এ ধারা রয়েছে। এ ধরনের বিতর্কে গুগলের অনেক ভালো সিদ্ধান্ত বেরিয়ে এসেছে বলে মনে করা হয়। ধারণা করা হয়, গুগলে শেষ দিকে পণ্য ব্যবস্থাপক মারিসা মেয়ার ও ইউটিউবের সিইও সালার কামাঙ্গারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শত্রুতার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। বর্তমানে গুগলের চাকরি ছেড়ে ইয়াহুর প্রধান নির্বাহীর পদে যোগ দিয়েছেন মারিসা মেয়ার এবং ইয়াহুকে ঢেলে সাজিয়েছেন তিনি। গুগলের একটি সূত্র জানিয়েছে, মারিসা মেয়ার খুব ভালো তার্কিক। নির্দিষ্ট তথ্য খুব দ্রুত স্মরণ রাখতে পারেন তিনি এবং কম সময়ে অনেক দরকারি কথা বলতে পারেন। এদিকে, মারিসার সঙ্গে কথার প্রতিযোগিতায় কোনোভাবেই পেরে উঠতেন না কামাঙ্গার। তবে নতুন আইডিয়া দিয়ে তিনি সব সময় ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিনকে নিজের পক্ষে রাখতে পেরেছিলেন। মেয়ারের দক্ষতা থাকলেও ল্যারি পেজের সঙ্গে কামাঙ্গারের ঘনিষ্ঠতা সব সময় তাঁকে জেতাতে সাহায্য করেছে। গুগলের রাজনীতিবিদ হিসেবে এখন গুগল প্লাসের ভিক গানডোটরা, সুন্দর পিশাই, অ্যান্ডি রুবিনের কথা সবার জানা। ভিক গানডোটরা তাঁর রাজনীতির গুণে গুগল প্লাস প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন, আর সুন্দর পিশাই কাজ করছেন গুগলের অ্যান্ড্রয়েড নিয়ে। তবে গুগলে যে কারও জায়গা স্থায়ী নয়, ল্যারি পেজকে তুষ্ট করে টিকে থাকতে হয়, তা বুঝতে পেরেছেন মারিসা মেয়ার ও অ্যান্ডি রুবিনের মতো অনেকেই। তবে গুগল সূত্র জানিয়েছে, অ্যাপল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে সহজে পৌঁছানো যায়, তবে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড নিয়ে সহজে তা হয় না। প্রশ্ন হচ্ছে, এ রাজনীতি ল্যারি কেন টিকিয়ে রেখেছেন? সময়ই বলে দেবে গুগলে এ রাজনীতির খেলার ভবিষ্যত্ কী। http://www.prothom-alo.com/technology/article/50377/%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%97%E0%A6%B2%E0%A7%87_%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE_%E0%A6%93_%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0_%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE

Friday, September 6, 2013

মানুষের ত্রাস হয়ে সাইব্রিডরা আসছে!

মানুষ আর কুকুরের জিন মেশানো হলে এরকম প্রাণী হতে পারে। ভাবুন তো, আপনার দুটো পাখা বা একটি বানরের মতো লেজ আছে! কেমন লাগে? ভবিষ্যতে মানুষ ও পশুর পাশাপাশি তৃতীয় আরেকটি গোত্রের প্রাণীর সম্ভাবনা অমূলক নয়। কেমন হবে তারা? বুদ্ধিমান নাকি গাধা টাইপের তা ঠিক করে দেওয়ার ক্ষমতা বিজ্ঞানীদের হাতে। নতুন প্রজাতির প্রাণী নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে যাচ্ছেন। এটা মানুষের জন্য ভালো হবে নাকি মন্দ? ভীতিকর নাকি আশাপ্রদ, এ নিয়ে সম্ভাবনা ও সংশয় থেকে যাচ্ছে। মানুষের ডিএনএর সঙ্গে পশুর ডিএনএ মিশিয়ে নতুন ভ্রূণ তৈরির বিষয়টিতে নানা নৈতিক বাধা রয়েছে বিজ্ঞানীদের। কিন্তু করপোরেট বিশ্বে নিজ স্বার্থ হাসিলে গোপন গবেষণা থেমে আছে কি? যেমন এখন প্রকাশ্যেই জাপানের গবেষকেরা প্রাণীদেহে মানুষের অঙ্গ তৈরির বিষয়টি নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছেন। জাপানের গবেষকেরা মানুষ ও প্রাণীর জিন ব্যবহার করে নতুন একধরনের ভ্রূণ তৈরি করতে চান। তাঁরা বলছেন যে, মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তৈরিতে কাজে লাগানোর জন্য গবেষণা করতে চান তাঁরা। এটাকে বলে ‘সিমেরিক এমব্রায়ো’ নিয়ে গবেষণা। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ‘সিমেরিক এমব্রায়ো’ তৈরির এমন একটি প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছেন, যাতে প্রাণীর ভ্রূণের সঙ্গে মানুষের স্টেম সেল স্থাপন করা হয়। এতে করে প্রাণীর শরীরে ‘মানুষ ও পশুর হাইব্রিড’ তৈরি হবে, যা থেকে মানুষের চিকিত্সায় ব্যবহূত অঙ্গ পাওয়া যাবে। গবেষকদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, মানুষ ও প্রাণীর মিশ্রিত ভ্রূণ গর্ভাশয়ে স্থাপনের পর স্বাভাবিক জন্মগ্রহণ করে হাইব্রিড প্রাণী। এরপর সেই হাইব্রিড প্রাণীদেহে উত্পাদিত অঙ্গটি সংগ্রহ করবেন গবেষকেরা এবং মানুষের শরীরে তা প্রতিস্থাপন করবেন। এখন পর্যন্ত ‘সিমেরিক এমব্রায়ো’ তৈরির বিষয়টি বৈধ; তবে কোনো প্রাণীর গর্ভে তা স্থাপন করার বিষয়টি বৈধ নয়। জাপানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অনুমোদন দেওয়ার কথা ভাবছে। জাপানের গবেষকেরা বলছেন, তাঁরা অনুমোদন পেলে এক বছরের মধ্যেই প্রাণীদেহে মানুষের অঙ্গ তৈরির বিষয়ে সাফল্য পাবেন। এসপ্লাইস মুভির দৃশ্য বিজ্ঞানের সাহায্যে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছেন গবেষকেরা। বিজ্ঞানের কাল্পনিক যে কাহিনি চিত্র আমরা হরহামেশাই দেখে আসছি, তা সত্যি হতে চলেছে। গবেষকেরা নতুন করে ‘মানুষ ও পশুর হাইব্রিড’ তৈরির বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করতে কাজ চলছে। আজ থেকে দুই বছর আগে ২০১১ সালে যুক্তরাজ্যের অ্যাকাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেস একটি সাড়াজাগানো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল; যাতে বলা হয়েছিল, দেশটির গবেষকেরা মানুষের বৈশিষ্ট্যযুক্ত প্রাণী পরীক্ষাগারে জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছেন। সিমেরিক এমব্রায়ো তৈরির গবেষণার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যেই আইন মানা হয়েছিল। গবেষকেরা এ সময় পশুর ডিম্বাণুর সঙ্গে মানুষের শুক্রাণু মিলিয়ে তৈরি করেন ‘সাইব্রিড’। এই সাইব্রিড যদি কখনও পরীক্ষাগার ছেড়ে উন্মুক্ত পৃথিবীতে এসে পড়ে তবে তাঁরা হবে অদ্ভুত এক প্রাণী। ইঁদুরের ও শূকরের দেহে তৈরি হচ্ছে মানব দেহের বিভিন্ন অংগ মানুষ ও পশুর ভ্রূণ তৈরির বিষয়টি সব সময় বিতর্ক তৈরি করেছে, নৈতিকতার প্রশ্ন উঠেছে। যুক্তরাজ্যের গবেষকেরা নৈতিকতার প্রশ্নে গবেষণার কাজ এগিয়ে নিতে পারেননি। এ রকম দুটি গবেষণার ক্ষেত্র হচ্ছে মানুষের শুক্রাণু বা ডিম্বাণুধারী কোনো হাইব্রিড ও মানুষের মস্তিষ্ক বা বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন হাইব্রিড। এখন পর্যন্ত কোনো ভ্রূণকে ফিটাস পর্যায়ে রূপান্তর করা যাবে না। ভ্রূণ তৈরির ১৪ দিন পরেই তা ধ্বংস করে ফেলতে হয়। কল্পনা আর বাস্তবের মধ্যে অনেক ফারাক। আমাদের কল্পনাকে হার মানাতে পারে এমন কিছু নিয়েও হয়তো কোনো গোপন গবেষণাগারে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। মানুষের ডিএনএর সঙ্গে অন্য কোনো প্রাণীর ডিএনএ মিশিয়ে নতুন কোনো প্রাণী তৈরির প্রচেষ্টা। নিশ্চয় বায়োটেকনোলজির সাহায্যে মানুষের বৈশিষ্ট্যযুক্ত প্রাণী তৈরির বিষয়টি গা ছমছমে এক বিষয়। ভয় বা আশঙ্কা কোনো ‘ফ্রাংকেনস্টাইনের’ (দানবের নাম)। একদিন আমাদের সঙ্গে কারা সহবস্থান করবে তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে ভয়। কোনো এক বিজ্ঞানী বলেছিলেন, এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণীদের নিয়ে ভয় নেই, আমাদের মধ্যেই এলিয়েন আছে তাকে নিয়েই ভয়। ডলি যেভাবে তৈরি হয়েছে সেভাবেই উন্নত গবেষণায় ভেড়ামানব অসম্ভব নয় কর্পোরেট কোনো প্রতিষ্ঠানের গোপন অন্ধকার কুঠুরি থেকে একদিন হয়তো সূর্যের আলোয় বেরিয়ে পড়বে উড়ুক্কু মানুষ, চারপেয়ে মানুষ, কুকুরের মত দেহ কিন্তু প্রজননক্ষমতা মানুষের মতো। ভয়ের নাকি সম্ভাবনার? বিশ্বাস করুন, আর নাই করুন, ওরা আসছেই! ড্রোন বা চালকবিহীন বিমান নয়, এরপর মানবজাতিকে পঙ্গু করতে আসছে নতুন ত্রাস! হাইব্রিড ও সাইব্রিড! মানুষ আর বানর তৈরির পথে নতুন সাইব্রিড মাছের সঙ্গে ঘোড়ার জিন নতুন প্রজাতির প্রাণী নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে যাচ্ছেন। এটা মানুষের জন্য ভালো হবে নাকি মন্দ? ভীতিকর নাকি আশাপ্রদ, এ নিয়ে সম্ভাবনা ও সংশয় থেকে যাচ্ছে। মানুষের ডিএনএর সঙ্গে পশুর ডিএনএ মিশিয়ে নতুন ভ্রূণ তৈরির বিষয়টিতে নানা নৈতিক বাধা রয়েছে বিজ্ঞানীদের। কিন্তু করপোরেট বিশ্বে নিজ স্বার্থ হাসিলে গোপন গবেষণা থেমে আছে কি? মানুষের বাচ্চা হবে মুরগির মতো!